
বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া নয়ানি গ্রামে যৌতুক ও পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রবাসী স্ত্রী কে হামলা ও নির্যাতন চালিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী, সতীন সহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। প্রায় ছয় ঘণ্টা ব্যাপী হামলার পর আহত স্ত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় থানা পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।গত ১৫ অক্টোবর বুধবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে ১ নং ওয়ার্ড ফকির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আহতের নাম মোরশেদা বেগম, সে ওই এলাকার মাসুম হোসেনের স্ত্রী। বর্তমানে গুরুতর অবস্থা বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আহত এর মেয়ে মাহিয়া আক্তার মিমি জানান, আমার মা মোর্শৈদা বেগম প্রবাসে থাকাকালীন সময় বাবা গত তিন বছর পূর্বে গোপনে বিয়ে করে। আমার মায়ের অনেক টাকা আত্মসাৎ করেছে।গত এক মাস পূর্বে মা দেশে আসেন, জানতে পারেন বাবার দ্বিতীয বিয়ের কথা। বিষয়টি নিয়ে বাবা ও মা তাদের মধ্যে পারিবারিকভাবে বিরোধ হয়।
আমার মাকে আমার বাবা ও তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ফারজানা আক্তার মনি বাসা থেকে উৎখাত করার জন্য শারীরিক, মানসিক নির্যাতন চালায়। ঘটনার দিন গত বুধবার যৌতুক ও দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে দ্বন্দ্বে মা মোরশেদা বেগমের সাথে দ্বন্দ্ব হয় বাবা মাসুম হোসেন ও তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ফারজানা আক্তার মনির।
একপর্যায়ে পরিকল্পিতভাবে মাকে হত্যার চেষ্টা অমানুষিকভাবে শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতন চালায় মাসুম, মনি, মনীর বোন মুক্তা ও রিমা। রিমার স্বামী ফিরোজ সহ অজ্ঞাতনামা সহযোগীরা। এ সময় মাকে বাঁচাতে মেয়ে মিমি আসলে তাকেও পিটিয়ে আহত করেন মাসুমসহ অন্যান্য সহযোগীরা।
আহত মোরশেদা জানান, আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে আমার সাথে প্রতারণা করেছে, আমি প্রবাসে থাকাকালীন সময় কয়েক লাখ টাকা আমার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। এখনো আমার কাছে মোটা অংকের যৌতুক দাবি করে, তাছাড়া আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার করে বিষয়টি আমি স্বাভাবিকভাবে মানতে পারিনি। এটা নিয়ে আমার স্বামীর সাথে আমার দ্বন্দ্ব হয়। এমনকি আমার কাছে আরো যৌতুক দাবি করে। গত বারই অক্টোবর রবিবার আমাকে আমার বাবার বাড়ি খুলনা থেকে কৌশলে আমাকে ডেকে আনে স্বামী মাসুম, আসার পর আমি তিন-চারদিন স্বামীর সাথে সংসার করি। এক পর্যায় স্বামী আমার কাছে মোটা অংকের যৌতুক দাবি করে আমি দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করল আমাকে আমার স্বামী সতীন সহ তাদের পরিবারের সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা ও নির্যাতন চালিয়ে জখম করেন। আমার দুই মেয়ে, বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে, ছোট মেয়ের বয়স ১২ বছর, আমি আসার সময় আমার ছোট মেয়েকে জিম্মি করে তারা রেখে দেয়। আমি এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত স্বামী মাসুম জানান, মোর্শেদার সাথে আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমিও বিয়ে করেছি, আমার স্ত্রী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সে আমার ১১ বছরের ছোট মেয়েকে আমার জিম্মায় দিতে এসেছে আমার বাড়িতে। কিন্তু সে এসে আমাকে বিবাহ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এটা নিয়ে প্রতিবাদ করলে আমাকেও আমার স্ত্রীর উপরে হামলা চালায়। তার উপরে আমি নির্যাতন করিনি।
এই ঘটনায় বিমানবন্দর থানার এসআই অতনুদে রনি জানান, তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সাথে স্বামীর হাতাহাতি হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্তি করি।